অস্টিওপরোসিস: হাড় ক্ষয়ের নীরব রোগ!

বাংলাদেশ অর্থোপেডিক সোসাইটির মতে, দেশের অন্তত ৩% মানুষ অস্টিওপরোসিসে আক্রান্ত, এবং নারীরা পুরুষদের তুলনায় বেশি ঝুঁকিতে থাকে।

অস্টিওপরোসিস কী?

অস্টিওপরোসিস হলো এক ধরনের হাড় ক্ষয়ের রোগ, যেখানে হাড়ের ঘনত্ব (bone density) কমে যায়, ফলে হাড় হয়ে পড়ে দুর্বল, ছিদ্রযুক্ত এবং ভঙ্গুর। সাধারণত আমাদের দেহে হাড় ভাঙা ও গঠনের একটি স্বাভাবিক চক্র চলে, তবে যখন হাড় ক্ষয়ের গতি গঠনের তুলনায় বেশি হয়, তখনই অস্টিওপরোসিস হয়।

হাড়ের গঠনমূলক দুই অংশ:

•কমপ্যাক্ট বোন: বাইরের শক্ত স্তর

•স্পঞ্জি বা ট্রেবাকুলার বোন: ভেতরের ছিদ্রযুক্ত স্তর

অস্টিওপরোসিসে কমপ্যাক্ট স্তর পাতলা হয় এবং স্পঞ্জি স্তরের ছিদ্র বেড়ে যায়, যা হাড়কে দুর্বল করে এবং সহজেই ফ্র্যাকচারের দিকে নিয়ে যায়।

অস্টিওপরোসিসের কারণসমূহঃ

✔️ক্যালসিয়ামের ঘাটতি

✔️ইস্ট্রোজেন হরমোনের ঘাটতি (বিশেষ করে মেনোপজের পর)

✔️হরমোনাল ভারসাম্যহীনতা (অনিয়মিত পিরিয়ড, হাইপারথাইরয়েডিজম)

✔️জিনগত প্রভাব / পারিবারিক ইতিহাস

✔️দীর্ঘদিন উচ্চ ডোজ স্টেরয়েড সেবন

✔️অপুষ্টি ও অ্যানোরেক্সিয়া

✔️বয়স (৬৫ বছরের পর)

✔️ভিটামিন D ঘাটতি, ডায়াবেটিস, ক্যান্সার ইত্যাদি

✔️ধূমপান ও অতিরিক্ত অ্যালকোহল গ্রহণ

প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা কি নিতে পারেন ?

অস্টিওপরোসিসের চিকিৎসার চাইতে প্রতিরোধে গুরুত্ব দেওয়া জরুরি। নিচের বিষয়গুলো মেনে চললে হাড় সুস্থ ও শক্তিশালী রাখা সম্ভব:

 ব্যায়াম ও শরীরচর্চা

•রেজিস্ট্যান্স ট্রেনিং / ওয়েট বেয়ারিং এক্সারসাইজ হাড়ের ঘনত্ব বাড়ায়

•ব্যালেন্স ও মাংসপেশি শক্তিশালী করে ফ্র্যাকচারের ঝুঁকি কমায়

•হাঁটা, দৌড়, নাচ, টেনিস — হাড়ের গঠন মজবুত করে

 পুষ্টিকর খাদ্যাভ্যাস

•ক্যালসিয়াম, ভিটামিন D, প্রোটিন, ওমেগা-৩ ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার

•প্রয়োজন অনুযায়ী ডাক্তারের পরামর্শে সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ

জীবনধারায় পরিবর্তন

•ধূমপান ও অ্যালকোহল থেকে দূরে থাকা

•পরিমিত ও স্বাস্থ্যকর জীবনধারা বজায় রাখা

অস্টিওপরোসিস হাড়ের এক নীরব ও ধীরে ধীরে বাড়তে থাকা রোগ। তবে সচেতনতা, নিউট্রিশন , ব্যায়াম, এবং সময়মতো চিকিৎসা গ্রহণের মাধ্যমে এ রোগকে প্রতিরোধ করা সম্ভব।

If you found this helpful, drop a comment below — your support fuels my next piece!

Thank you.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *